
দুষ্কৃতিদের হামলায় আহত তৃণমূল কর্মী নাজিমুদ্দিন সেখ, দীর্ঘদিন চিকিৎসার পর ফিরেছেন বাড়ি; ঘটনায় গ্রেফতারির সংখ্যা ২০ ছাড়াল
মুর্শিদাবাদ জেলার হরিহরপাড়া ব্লকের নাজিরপুর গ্রাম ফের শিরোনামে। কয়েক সপ্তাহ আগে এই গ্রামে দুষ্কৃতিদের গুলিবর্ষণ ও বোমা নিক্ষেপের ঘটনায় রক্তাক্ত হয়েছিলেন স্থানীয় তৃণমূল কর্মী নাজিমুদ্দিন সেখ। গুরুতর জখম অবস্থায় তাঁকে কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। দীর্ঘদিন চিকিৎসাধীন থাকার পর সম্প্রতি তিনি বাড়ি ফিরেছেন। যদিও ঘটনার পর থেকেই আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছিলেন স্থানীয়রা।
পুলিশি অভিযান ও গ্রেফতারি
ঘটনার পর মূল অভিযুক্তরা গা ঢাকা দেয় বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছিল। তবে রবিবার রাতে গোপন সূত্রে খবর পেয়ে হরিহরপাড়া থানার পুলিশ নাজিরপুর গ্রামে বিশেষ অভিযান চালায়। ওই অভিযানে মূল অভিযুক্ত রাশিদুল সেখ-সহ মোট পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়।
পুলিশ জানিয়েছে, ধৃত রাশিদুলকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের সময় তার কাছ থেকে একটি আগ্নেয়াস্ত্র ও তিন রাউন্ড গুলি উদ্ধার হয়। পুলিশ মনে করছে, এই আগ্নেয়াস্ত্রই হামলার সময় ব্যবহৃত হয়েছিল। তবে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
গ্রেফতারির সংখ্যা বাড়ছে
নাজিরপুর কাণ্ডে এখন পর্যন্ত মোট ২০ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধাপে ধাপে একাধিক অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ আগ্নেয়াস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার হয়েছে। তদন্তকারীরা বলছেন, গোটা ঘটনাটির পেছনে একটি বড় দুষ্কৃতীচক্র সক্রিয় থাকতে পারে। তারাই এলাকায় সন্ত্রাসের পরিবেশ তৈরি করতে চেষ্টা করছিল।
নাজিরপুরের পরিস্থিতি ও স্থানীয় আতঙ্ক
এলাকার মানুষদের একাংশের দাবি, ঘটনার পর থেকে গ্রামে অস্থিরতা ও আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি হয়েছে। অনেকেই সন্ধ্যার পর বাইরে বের হতে ভয় পাচ্ছেন। তবে পুলিশের দাবি, এলাকায় নজরদারি ও টহলদারি বাড়ানো হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে মোড়ে বসানো হয়েছে চেকপোস্ট। স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে, পরিস্থিতি দ্রুত স্বাভাবিক করতে সব রকম পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।
তদন্তে নতুন তথ্যের ইঙ্গিত
তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে হামলার পেছনে থাকা মূল মদতদাতাদের খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে। পুলিশ সূত্রে খবর, দুষ্কৃতিদের কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া আগ্নেয়াস্ত্রগুলির উৎস ও পাচারের পথও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ঘটনার সঙ্গে আরও কেউ জড়িত কি না, তাও খুঁজে দেখা হচ্ছে।
প্রশাসনের বার্তা
জেলার পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, “আইন নিজের গতিতে চলবে। অভিযুক্ত যেই হোক, কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। এলাকায় শান্তি ও আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখতে আমরা কড়া পদক্ষেপ নিচ্ছি।”
স্থানীয় সূত্রে খবর, হরিহরপাড়া ব্লকের বিভিন্ন সংবেদনশীল এলাকাতেও নজরদারি বাড়ানো হয়েছে যাতে ভবিষ্যতে এমন কোনও ঘটনা আর না ঘটে।